বর্ষা এলো ফিরে
ঈশ্বরগঞ্জ - ১৯৮৪
নূপুর পায়ে ছন্দ তুলে
বর্ষা ফিরে এলো,
অবিরাম ঝরছে শুধু
বৃষ্টি এলোমেলো।
নদ-নদী ও খাল-বিল
পূর্ণ হলো জলে,
সরসীতে শাপলা-কমল
উঠছে দোলে দোলে।
ক্ষণে ক্ষণে কাঁপছে ধরা
মেঘের গরজনে,
কদম কেয়া বকুল বেলা
ফুটছে বনে বনে।
কাজল কালো বরণে ছেয়ে
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো,
অবিরাম ঝরছে শুধু
বৃষ্টি এলোমেলো।
সামান্য
ভুল
হলে
ঈশ্বরগঞ্জ
- ২৭/০৬/১৯৮৬
কাগজ কলম
নিয়ে বসে
আছি
লিখব একটা
কিছু,
রাত কত
হলো
জানি না
কিন্তু
ঘুম ছাড়ছে
না পিছু।
এক দুই
তিন
চার লাইন
লিখে
কলম আর
না চলে,
পণ করেছি
আজ
শেষ না
করে
উঠব না
ভোর হলে।
চিন্তার জাল
বিছায়ে দিয়াছি
ভাবের সমুদ্রেতে,
ছন্দ ও
তাল
দেয় না
যে ধরা
চায় শুধু
চলে যেতে।
এমনি করে
রাত দ্বিপ্রহর
চলে গেলো
কোন ছলে,
লিখছি তবুও
ক্ষমা করে
দিও
সামান্য ভুল
হলে।
তোমার বিহনে
ঈশ্বরগঞ্জ - ৩০/০৬/১৯৮৬
তোমার বিহনে
সবুজ কাননে
কুসুম যে নাহি ফোঁটে,
মধুকর তাই
গুণজনে ওই
এদিক ওদিক ছোঁটে।
তোমার বিহনে
সুনীল গগনে
রবি না প্রকাশ হয়,
গ্রহ তারা শশী
সমস্ত নিশী
জ্যোছনা নাহি ছড়ায়।
তোমার বিহনে
সাগর গহীনে
নিস্তেজ স্রোত বহে,
জোয়ার আসে না
ভাটাও পরে না
নিরব নিথর রহে।
তোমার বিহনে
ঘোর অরণ্যে
সবি যে লাগে আঁধার,
বিহঙ্গ শত
কুজনেতে রত
হয় না কখনো আর।
তোমার বিহনে
দক্ষিণা পবনে
জুড়ায় না দেহ মন,
মাতাল বেগেতে
ধানের শীষেতে
বুলায় না পরশন।
তোমার বিহনে
আষাঢ় শ্রাবনে
হয় না যে বরিষন,
ক্ষণে বার বার
মেঘমালা আর
করে না যে গরজন।
তোমার বিহনে
আজি এ ফাগুনে
ঘরে নাহি রয় মন,
কাটে না সময়
কি করিব হায়
ভাবি বসে অনুক্ষণ।
তোমার বিহনে
প্রকৃতির সনে
কত কথা বলে যাই,
কেটে যায় বেলা
করে কত খেলা
আনন্দ তবু না পাই।
তোমার বিহনে
ভরা এ যৌবনে
নিরস লাগে ধরণী,
কত রূপ রাশি
সবি হলো বাসি
যেন তিমির বরণী।
তোমার বিহনে
আমি নিরজনে
একা একা বসে ভাবি,
তুমি যে আমার
আমি যে তোমার
নাহলে বৃথা যে সবি।
তোমার বিহনে
মোর কবি মনে
বিরহের সুর বাজে,
কবে বধুবেশে
দেখা হবে শেষে
অপরূপ কোন সাজে।
জন্মভূমির তরে
ঈশ্বরগঞ্জ - ২৬/০৬/১৯৮৬
শস্য-শ্যামলা সুজলা-সুফলা
সোনার বাংলাদেশ,
বিশকোটি হাতে গড়ব মোরা
ভুলে হিংসা-বিদ্বেষ।
পরাধীনতার শৃংখল ছিঁড়ে
মুক্ত করেছি সবি,
ফিরিয়ে এনেছি স্বাধীনতা আজি
কেড়েছি রক্ত রবি।
ঊষার গগনে রাখালের গানে
মুখরিত চারিদিক,
নদীর চরেতে আলো প্রতিফলে
বালি করে চিক্মিক্।
ভাটিয়ালী সুর মাঝি ভাই সাধে
বাদাম তুলিয়া নায়,
ছুটিয়া চলিল অজানার টানে
পূব-দক্ষিণা বায়।
সবুজ কোমল ঘাসের গালিচা
বিছায়ে দিয়াছি কত,
সাদা বালিহাঁস উড়ছে গগনে
অসংখ্য শত শত।
পদ্মা মেঘনা ভাগিরথী আর
যমুনা কর্ণফুলী,
ভাঙছে এপাড় গড়ছে ওপাড়
আরাম আয়েশ ভুলি।
বনে বনে সবে ফুটছে কত যে
নাম হারা সবফুল,
দক্ষিণা বাতাসে গন্ধ বিলিয়ে
দোলছে যে দোল দোল।
ধূসর বরণ মেঘের চাদর
জড়ায়ে রয়েছে গায়,
নদীর জলেতে আগুন জ্বালিয়ে
সূরয অস্ত যায়।
জন্মভূমির তরে আজ মোরা
জীবন করেছি পণ,
যত শত বাঁধা আসুক সুমুখে
লড়ব যে আমরণ।
আমি কবি হতে চাই
ঈশ্বরগঞ্জ - ৩০/০৬/১৯৮৮
আমি কবি হতে চাই,
নামডাক ছড়িয়ে নয় তাই
তোমার মনেতে পাব এতাটুকু ঠাঁই
এই কামনায় আমি গান গেয়ে যাই,
আমি কবি হতে চাই।
আমি হতে চাই কবি,
হৃদয় পটে এঁকে যাব ছবি
আকাশে যেমন ওঠে জ্বলন্ত রবি
কিরণ ছড়িয়ে আলোকিত করে সবি,
আমি হতে চাই কবি।
আমি চাই কবি হতে,
মিশে যাব প্রকৃতির সাথে
স্মৃরনে আসব আমি শরতের রাতে
ঘুম হয়ে নেমে যাব তোমা আঁখি পাতে,
আমি চাই কবি হতে।
কবি হতে চাই আমি,
লিখে যাব তাই দিবসযামী
তারাভরা রাতে যদি কাছে থাকো তুমি
ঊষা আসবে না আর ধরণীতে নামি,
কবি হতে চাই আমি।
জীবন সায়াহ্নে
ঈশ্বরগঞ্জ - ১৭/০৮/১৯৮৮
মনে পড়ে আজি
শৈশবকালে কেটে যাওয়া কত ক্ষণ
বাবামা’র সেই স্নেহের পরশ কখনো বা শাসন,
এমনি করে শৈশব থেকে বাল্যের আগমণ।
মনে পড়ে আজি
সেই ছুটাছুটি খোলা মাঠ প্রান্তরে
লাটিম ঘুরিয়ে ঘুড়ি উড়িয়ে ফিরে আসা শেষে ঘরে,
খেলার সাথীরা কোথায় যে গেল ব্যথা রেখে অন্তরে।
মনে পড়ে আজি
ভরা বরষার বৃষ্টিতে ভিজে নেয়ে
কদম ফুলের মালা গড়াতাম কদম তলায় যেয়ে,
কত না খুশী হতো যে বুজান ফুলের মালা পেয়ে।
মনে পড়ে আজি
বাল্যকালের ঝলমলে সব স্মৃতি
চাঁদনী নিশীথে দাদুর কাছেতে শুনতাম শ্লুকগীতি,
বাল্যের পরে কৈশর এলো এই তো নিয়ম রীতি।
মনে পড়ে আজি
পদ্ম দিঘীতে গোছল করার ছলে
এপারে ওপারে সাতার কেটে কত বেলা যেত চলে,
ভয়ে ভয়ে তাই ফিরতাম ঘরে পাছে কেউ কিছু বলে।
মনে পড়ে আজি
শীতের সকালে লেপ মুড়ি দিয়ে বসে
পাঠশালার ঐ গুরু মশায়ের পাঠ সেরে অবশেষে,
হরেক রকম পিঠা ও পায়েস খেতাম খেজুর রসে।
মনে পড়ে আজি
বাঁশ ঝাড় হতে ছিপ কেটে এনে চেঁছে
বড়শী বানিয়ে মাছ ধরেছি খালের সাঁকোর কাছে,
দূর্বার বেগে যৌবন এলো কৈশর গেলো পাছে।
মনে পড়ে আজি
রঙিন স্বপনে বিভোর গোধলী লগ্ন
নব-বসন্তে মনের বাগানে কোকিল গানেতে মগ্ন,
কোমল পরশ বুলিয়ে মানসী সব ধ্যান করে ভগ্ন।
মনে পড়ে আজি
উত্তাল সেই যৌবনেরই কথা
স্রোতের মত এলো আর গেলো এখন সবি যে বৃথা,
ধীরে ধীরে গেলো যৌবন এলো বার্ধক্য যথাতথা।
মনে পড়ে আজি
স্মৃতি বিজড়িত সোনলী কতযে দিন
আসবেনা ফিরে কোনদিন আর হয়ে গেছে চির লীন,
নিজেকে হারিয়ে সেই কালে শেষে একালে নিঃস্বহীন।
বিক্ষুব্ধ তারুণ্য
ঈশ্বরগঞ্জ – ২৮,২৯/১২/১৯৮৯ ইং
আমি চলে যেতে চাই গ্রহান্তরে
মহাশূন্যের কালো আঁধারে মিশে
হেবো একাকার
ভীষণ একাকী হয়ে যেতে আমি চাই
শুধু বারবার।
যদি থেকে যেতে হয় এই
পৃথিবীতে -
কাঁটা হয়ে রবো ফুলের বৃন্তে
কোমল হাতের ঝরাতে রক্ত
মহাসুখে নিশ্চিন্তে।
আমি বিকট হাসিতে ফেটে পড়ে
দেবো
সৌরজগত
কাঁপিয়ে,
আমি
উঠেছি কেমন হাপিয়ে।
আমি ক্যান্সার হয়ে ছড়িয়ে পড়বো
সমাজ
দেহের ভিতরে,
ভয়ে দৌড়ে পালাবে যত
রোগব্যাধি
আসবে না কেউ কাছে,
শুধু ভেঙে দিয়ে সব রক্ত
কণিকা
ভাইরাসে
দেবো ভরে।
আমি ফিলিস্তিনি গেরিলার রূপে
জন্ম নেবো কাঁটা ভরা ঝোপে
বজ্র আঘাত হেনে যাবো আমি
বদ্ধ
করা দুয়ারে ;
খোলে দেবো যত আবরণ
ঠিক ছিল আগে সব যেমন,
শত্রুর বুক ঝাঝরা করবো মেশিনগানের
ফায়ারে।
আমি পূবের আকাশে কালো সাঝ
হয়ে
ভেসে
বেড়াতে চাই,
ঊষার আলোকে আলোকিত ভোর
চুরি করে নেবো আমি মহাচোর
আঁধার হৃদয়ে ছেড়ে দেবো নিয়ে
যদি সেথা হয় ভোর ;
আমি শীতের রাতের সুখের
স্বপ্ন
ভেঙে দিয়ে সুখ পাই।
আমি সাগর তলে টর্পেডো সেজে প্রবল গতিতে ছুটি, গুপ্তচরের মতো চুপিসারে শত্রু জাহাজে ফুটি।
আমি সিরাজের হাতে শানিত
কৃপাণ
শত্রুর দেহ করে খান খান,
রক্তের শ্রোতে ভাসিয়ে দেবো পলাশীর ময়দান,
ভয়ে থরথর করে কেঁপে উঠবে মীরজাফরের প্রাণ।
আমি ভূমিকম্পের প্রবল
কাঁপুণী গুরুগম্ভীর
নাদ,
চোখের পলকে মাটির সাথে
মিশিয়ে দেবো কঠিন হাতে
উঁচু উঁচু সব দালান কোঠার গগনচুম্বী ছাঁদ,
ফাটল ধরাবো শত্রু রাজ্যে পাতবো
গুপ্ত ফাঁদ।
আমি চীনের প্রাচীরে রূপায়িত
হয়ে
চারিদিক রবো ঘিরে,
ফলে প্লাবনের জল আছড়ে পরবে
দুর্ভেদ্য প্রাচীরে,
ছোট ছোট সব কুড়ে ঘর যত
আগলে রাখতে আমি সদা রত
টর্ণেডোরই মহা গতিবেগ ফিরে
যাবে ধীরে ধীরে,
হাসিমুখে আমি মিশে যাবো সেই বঞ্চিতদের ভীরে।
আমি সব কাজ শেষে কামারের বেশে
প্রতি ঘরে গিয়ে গিয়ে,
মুড়ে দেবো যত প্রেমিক হৃদয় ইস্পাত ধাতু দিয়ে,
পরশ পাথরে গড়িয়ে হৃদয়
ধুয়ে নিয়ে খাঁটি প্রেমের
আলোয়,
হৃদয়হীনের বুকচিড়ে আমি যতনে
দেবো বসিয়ে,
ভিতরের কালো আঁধার নাশিব
প্রেমের আলো জ্বালিয়ে।
কি দারুণ শিল্পী ওরা
ঈশ্বরগঞ্জ - ২৪/১২/১৯৮৯ ইং
কি দারুণ শিল্পী -
এদেশের দামাল সন্তানেরা ।
পীচঢালা রাজপথে আর সবুজ প্রান্তরে
কি সুন্দর আল্পনা এঁকে
যায় ওরা
অস্তরাগের লালিমা দিয়ে ।
রক্তলাল মানচিত্র
এঁকেছে ওরা
বঙ্গোপসাগরের তীরে ।
সজারুর আত্মরক্ষামূলক
প্রতিক্রিয়া রয়েছে
ওদের মাঝে,
রয়েছে দ্রুতগামী চিতার
ক্ষিপ্রতা,
আরো রয়েছে কালবৈশাখীর
প্রচন্ডতা ।
প্রকাশ্যে এঁকে চলেছে
ওরা
একের পর এক আজব সব
চিত্র ;
চিরস্থায়ী ক্যানভাসে
সুনিপুণ কৌশলে
শুধু লালের ছড়াছড়ি ।
প্রতিটি চিত্রে ফোঁটে
ওঠে -
ওদের তীব্র আক্রোশ,
প্রতিশোধের দাবানল ।
প্রতিটি স্থান ওদের অঙ্কিত
চিত্রে ভরা,
কি দারুণ শিল্পী ওরা !
রবোট আমি
ঈশ্বরগঞ্জ - ০৩/০২/১৯৯০ ইং
আমায় ভুলতে চাও ?
-
পারবে না কখনো ;
তোমার চেতনায় চির নিবাস আমার ।
একাকী কখনো যদি চোখ
বুজে থাকো
গভীর রাতে -
নিবিড় একাগ্রতায় সেই
নামে ডাকো
দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি
ঠাঁয় !
মনে হবে ভীনগ্রহের কোন
আজব প্রাণী
ভয় পেয়োনা ! ঐ তো ইষ্টেশনে বারোটার
মেলট্রেনের ঘন্টাধ্বনি ভেঙে দিল রাতের
নিস্তব্ধতা ।
তোমার চোখের পাতায়
নেমে আসা
তন্দ্রার সুখটুকু কেড়ে
নিয়ে আমি চলে যাচ্ছি,
আমি ফিরে যাচ্ছি সেই
গবেষণাগারে -
যেখানে সহস্র আমি তৈরী
হচ্ছি প্রতিদিন
জ্বলজ্যান্ত রবোটের রূপে ।
জীবন বৃক্ষ
ঈশ্বরগঞ্জ - ২৭/১২/১৯৮৯ ইং
ঝরে গেলো আরো একটি
পাতা
জীবন বৃক্ষ হতে
নিঃশব্দে, নিরবে -
একে একে সব ঝরে
পড়বে,
হাঁর কাঁপানো মাঘের
শীতে হয়ে যাবে নিস্প্রাণ ;
ভ্রমর আসবেনা, ফুল
ফুটবেনা,
পাখিরা গাইবেনা গান
;
এডালে ওডালে
ছুটাছুটি করে
প্রাণের ছোঁয়ায় রাখবেনা ভরে,
ক্লান্ত পথিক বসবেনা
এসে ছাঁয়াহীন গাছতলে ;
কখন আবার ঝড়ো হাওয়া
এসে
আঘাত হানবে মূলে ।
হবু রাজার এই দেশে
ঈশ্বরগঞ্জ - ১৪/১২/১৯৯০ ইং
উপসাগরে সংকট আর স্বদেশে ধমর্ঘট
লাঠিচার্জ আর কাঁদানে গ্যাসে
হলো তা আরো প্রকট ।
সারা দুনিয়ায় রব উঠলো "সাদ্দাম সাদ্দাম,"
আমাদের দেশে হবু রাজা কন নিজে বাঁচলেই নাম ।
গবুমন্ত্রীর সাথে শলা
করে রাজা কন অবশেষে,
“জরুরী আইন জারি হলো
শুনো
আজ হতে সারা দেশে ।”
স্বাধীনতাকামী জনতার
স্রোত নেমে এলো রাজপথে,
স্বৈর শাসন উৎপাটনের সঙ্কল্পে
শপথে ।
হবু রাজা দেখে মহা
সঙ্কট
কি করি কি করি হায় !
চালাও গুলি” আদেশ
দিলেন নইলে যে বাঁচা দায় ।
লালে লাল হলো তাজা
খুনে সব পথ ঘাট প্রান্তর,
শেষ বাঁচা আর হলোনা
রাজার
দিয়েও মরণ কামড় ।
হবুরাজা আর মহারাণী সহ গবুমন্ত্রীর দল,
গণবিদ্রোহে ভেসে গেল
নিয়ে সব চাতুরী ও ছল ।
গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে এদেশের ঘরে ঘরে,
স্বৈরশাসন হলো নিরসন সুদীঘর্কাল পরে ।
অন্বেষণ
ঈশ্বরগঞ্জ – ১১/০৮/১৯৮৯ ইং
আকাশের মাঝে আমি পেলাম তোমায়
যখন তৃষিত মন
কাছে পেতে চায়,
দৃষ্টির সীমা ছাড়ি
পাখিরা দেয় যে
পাড়ি
সেই সাথে মন মোর
চলে যেতে চায়,
আকাশের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়।
আকাশের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়
যখন তৃষিত মন
কাছে পেতে চায়,
দিগন্ত রেখা যবে
মিশে একাকার হবে
দিবাকর থেকে থেকে
লালিমা ছড়ায়,
আকাশের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়।
সাগরের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়
যখন তৃষিত মন
কাছে পেতে চায়,
সুবিশাল জলরাশি
জোয়ারের রূপে আসি
ধরণীর মলিনতা ধুয়ে নিয়ে যায়,
সাগরের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়।
সাগরের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়
যখন তৃষিত মন
কাছে পেতে চায়,
তটিনীর সমাগমে
সাগরের সঙ্গমে
মত্ত লহরী মালা
নাচে মোহনায়,
সাগরের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়।
কাননের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়
যখন তৃষিত মন কাছে পেতে চায়,
সবুজের ছড়াছড়ি
গাছগুলি আড়াআড়ি
দাঁড়িয়ে রয়েছে
সবে নিজ নিজ ঠাঁয়,
কাননের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়।
কাননের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়
যখন তৃষিত মন
কাছে পেতে চায়,
নিস্তব্ধ পরিবেশে
হিমেল পবন এসে
তোমারি দেহের মৃদু
ছোঁয়া দিয়ে যায়,
কাননের মাঝে আমি
পেলাম তোমায়।
অনাবৃত অধ্যায়
ঈশ্বরগঞ্জ - ২৩/১২/১৯৮৯ ইং
এ কোন অধ্যায়ে বিচরণ করছি
আমি ?
শৈশবের দুরন্তপনা কৈশরের শতকল্পনা পেরিয়ে
অজানা কক্ষপথে থেমে গেছি
হঠাৎ ।
প্রদক্ষিণ করে চলেছি
অনাহূত বতর্মানকে
অসংথ্য সূয্যের মহাকর্ষ
শক্তি ছিন্ন করে ;
এ আমি কোন আমি ?
আমার আঁধার পৃষ্ঠে
প্রতিফলিত হতে দেবোনা
কোন আলোকচ্ছ্বটা ।
নিস্ফল আক্রোশে ফেটে পড়া
দেখতে চাই
অসংখ্য সূরযের ।
চাঁদের অপর পৃষ্ঠ আমি
দেখেছি
তাই দেখতে চাইনা আর
নাটকের শেষ অঙ্ক ।
আমি ভীষণ ক্লান্ত -
তাই ফিরে যেতে চাই
অস্তিত্বহীন ক্রান্তিলগ্নে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন